সোজা কথা ডটকম রিপোর্ট: যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তাঁর ডেমোক্র্যাটিক প্রতিদ্বন্দ্বি জো বাইডেন গত রাতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পূর্ববর্তী যে বিতর্ক করেছেন তাকে এক বিশৃঙ্খল এবং কলহপূর্ণ বিতর্ক অভিহিত করেছে ভয়েস অফ আমেরিকা(ভোয়া)। নব্বই মিনিট ধরে তাঁরা আমেরিকান ভোটদাতাদের এটাই বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে আগামি চার বছরের জন্যে দেশের নেতৃত্ব দেবার জন্যে তাঁর প্রতিপক্ষ অযোগ্য।
ভোয়া বাংলা বিভাগের প্রতিবেদনে বলা হয়, তাঁরা বিশ্বে করোনাভাইরাসে সর্বোচ্চ মৃত্যুর সংখ্যা যে দু লক্ষ পাঁচ হাজার এই যুক্তরাষ্ট্রেই, ৩রা নভেম্বরের নির্বাচনের সংহতি এবং সততা, ট্রাম্প যে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পদে রক্ষণশীল বিচারক অ্যামি কনি ব্যারেটকে মনোনয়ন দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন বর্ণের লোকের মধ্যকার ভঙ্গুর সম্পর্ক, পরিবেশ নীতি এ সব নিয়ে বিতর্কে লিপ্ত হন। ট্রাম্প এ সপ্তায় প্রকাশিত নিউ ইয়র্ক টাইমস ‘এর একটি প্রতিবেদন সম্পর্কে দ্বিমত প্রকাশ করেন যাতে বলা হয়েছে যে তিনি যে বছর প্রথম প্রেসিডেন্ট পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন সেই ২০১৬ সালে এবং প্রেসিডেন্ট হবার পর প্রথম বছর ২০১৭ সালে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের আয়কর বাবদ মাত্র সাড়ে সাত শ ‘ ডলার দিয়েছিলেন। ট্রাম্প বলেন যে তিনি লক্ষ লক্ষ ডলার আয়কর দিয়েছেন কিন্তু বাইডেন বলেন যে ট্রাম্প গড়ে স্কুল শিক্ষকরা যে আয়কর দেন তার চেয়েও কম আয়কর দিয়েছেন।
ট্রাম্প ও বাইডেন ওহাইও অঙ্গরাজ্যের ক্লিভল্যান্ডে ফক্স নিউজের ক্রিস ওয়ালেসের সঞ্চালনায় বিতর্কের মঞ্চে দাঁড়িয়ে বিতর্কের অনেকখানি অংশজুড়েই পরস্পরকে অপমান করেন, পরস্পরের প্রতি বাক্যবান নিক্ষেপ করেন এবং ব্যক্তিগত পর্যায়ে আক্রমণ করেন। বাইডেন ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে বলেন তিনি হচ্ছেন আমেরিকার সব চেয়ে খারাপ প্রেসিডেন্ট। তিনি বেশ কয়েকবারই ট্রাম্পকে ক্লাউন বা ভাঁড় বলে অভিহিত করেন। ট্রাম্প পাল্টা জবাবে বলেন, “আমি প্রেসিডেন্ট হিসেবে গত ৪৭ মাসে যা করেছি আপনি গত ৪৭ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে তা করতে পারেননি”। ট্রাম্প যুক্তি দেখান যে আগামি জানুয়ারিতে বাইডেন প্রেসিডেন্ট হলে দেশে অভূতপূর্ব মন্দা দেখা দেবে কারণ ডেমোক্র্যাটদের পরিকল্পনাই আছে যারা বছরে চার লক্ষ ডলারের বেশি উপার্জন করছেন তাদের উপর এবং কর্পোরেট আয়ের উপর ২১ শতাংশ থেকে ২৮ শতাংশ পর্যন্ত কর বৃদ্ধি করা।
সত্তুরোর্ধ এই দুই প্রার্থীই যুক্তরাষ্ট্রে এই মহামারি নিয়ন্ত্রণের উপায় নিয়েও বিতর্কে লিপ্ত হন। বাইডেন দাবি করেন এ ব্যাপারে প্রেসিডেন্টের কোন পরিকল্পনা নেই। ট্রাম্প দাবি করেন তাঁরা প্রশংসনীয় কাজ করেছেন এবং কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই টীকা পাওয়া যাবে। ডাক মারফত ভোট হলে ট্রাম্প মনে করেন ভোটে কারচুপি হবে তবে বাইডেন বলেন যে ডাক মারফত ভোটে জালিয়াতি হবার কোন প্রমাণ নেই। জরিপে দেখা গেছে বেশির ভাগ ডেমোক্র্যাট ডাকে ভোট দেবার পক্ষে কিন্তু অধিকাংশ রিপাবলিকানই বলছেন যে তাঁরা নির্বাচনের দিনই সরাসরি ভোট দেবেন। জনমত জরিপে ট্রাম্পের তূলনায় বাইডেন ৭ শতাংশ পয়েন্টে এগিয়ে আছেন যদিও গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ অঙ্গরাজ্যে তাঁদের মধ্যে পার্থক্য খুব কম।