ডেস্ক রিপোর্ট: রাজধানীর ওয়ারীতে পুলিশের বেধড়ক মারধরের শিকার হয়েছেন এক সাংবাদিক। আহত তুহিন হাওলাদার বাংলাদেশ প্রতিদিনের আদালত বিটের প্রতিবেদক ও আইনজীবী। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে টিকাটুলির কে এম দাস রোডে তাকে পেটায় ওয়ারী থানা পুলিশের একটি দল। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় সাংবাদিক তুহিনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তুহিনকে মারধরে জড়িত অভিযোগে ওয়ারী থানার এসআই মাহবুবুর রহমানকে তার দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের ওয়ারী জোনের এসি মো. হাণ্ণানুল ইসলাম।
আহত তুহিন হাওলাদার বলেন, ‘দুপুরে কে এম দাস রোডে ওয়ারী থানার এসআই মাহবুবুর রহমানসহ একজন পুলিশ ও একজন আনসার সদস্য আমার বাইক থামাতে বলে। বাইক থামালে ঘর থেকে কেন বের হয়েছি এটা বলেই তারা আমাকে মারধর শুরু করে। তারা আমাকে কোনো কথা বলারই সুযোগ দেয়নি।’
সাংবাদিক তুহিনকে মারধরের কারণ জানতে চাইলে অভিযুক্ত এসআই মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওই এলাকা লকডাউন ছিল। তার পরও ওই ব্যক্তি (তুহিন) সেখান দিয়ে যেতে গেলে আমি বাধা দিই। তার মোটরসাইকেলের চাবি নিতে গেলে সে আমাকে আঘাত করে। পরে আমিও তাকে আঘাত করি।’ গাড়িতে সংবাদপত্রের (বাংলাদেশ প্রতিদিন) স্টিকার লাগানো সত্ত্বেও কেন বাধা দিয়েছেন তা জানতে চাইলে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘অনেক গাড়িতেই তো সাংবাদিক লেখা থাকে, কিন্তু চালক সাংবাদিক থাকে না।’ তবে সাংবাদিক তুহিনের পরিচয় জানতে না চেয়েই তার মোটরসাইকেলের চাবি কেড়ে নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি এসআই মাহবুবুর। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার শাহ ইফতেখার আহমেদ জানান, ‘বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। কী কারণে ওই ঘটনা ঘটেছে তা জানার চেষ্টা চলছে। ওই পুলিশ সদস্যদের (এসআই মাহবুবুর) বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এদিকে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ইকবাল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক হোসেন আলী খান হাসান; তুহিন হাওলাদারকে ওয়ারী থানা পুলিশ কর্তৃক শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, বিগত ১৬ এপ্রিল রাজধানীর টিকাটুলীর কেএম দাস লেন-এ ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট তুহিন হাওলাদারকে ওয়ারী থানার এসআই মাহবুবুর রহমানসহ কয়েকজন পুলিশ মারাত্মকভাবে আহত করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। অ্যাডভোকেট তুহিন হাওলাদারকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় ঢাকা আইনজীবী সমিতি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছে।