সোজা কথা ডেস্ক রিপোর্ট: প্রতারণার জাল খুব দীর্ঘ। এদের চেহারা বেশভূষা দেখলে মানুষ বিভ্রান্ত হয়। এই যেমন দেখুন এই এক প্রতারক। চেহারা দেখলে বোঝার উপায় নেই এই মানুষটি একজন অশিক্ষিত এবং মালয়েশিয়ার শ্রমিক। কিন্তু নিজে শ্রমিক হলেও মালয়েশিয়া বিএনপির প্রচার সম্পাদক হওয়ার সুবাদে এই লোকটির কাছে সর্বস্বান্ত হওয়ার অভিযোগ করেছে অর্ধশত শ্রমিক।
শুধু টাকাই নয়। অভিযোগ রয়েছে পাসপোর্ট লোপাটেরও। বাংলাদেশের ময়মনসিংহের নান্দাইলের এই শ্রমিক মামুন বিন আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়া পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করলেও সবকিছু ম্যানেজ করে মামুন মালয়েশিয়াতে রয়েছে বহাল তবিয়তে। উল্টো সে প্রেস কনফারেন্স করে তার অবস্থান জানান দিয়েছে সবাইকে।
কিন্তু শ্রমিকরা তার কাছে যেতে ভয় পাচ্ছে। কারন সবাই মামুনের কারনেই ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ অবস্থায় রয়েছে এবং কারো কাছেই পাসপোর্ট নেই। মামুন এই সুযোগটাই নিচ্ছে বলে জানা গেছে। কেউ তার কাছে গেলে এবং পাসপোর্ট ও টাকা চাইলে উল্টো তাকে পুলিশে ধরিয়ে দেয়ার ভয়ে কেউ তার কাছে ভিড়ছে না।
এদিকে মালয়েশিয়া বিএনপির নেতারা মামুনের এই প্রতারনাকে মেনে নিতে না পারলেও কেউই মুখ খুলছে না। নাম প্রকাশ না করেই নেতারা বলেন এই অশিক্ষিত শ্রমিক মামুনকে কেউ পছন্দ না করলেও মেনে নিতে হচ্ছে।
তবে ভবিষ্যতে ভুক্তভোগী কোন শ্রমিক মামুনের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে কোন অঘটন ঘটানোর সম্ভাবনা রয়েছে বলে অনেকের মন্তব্য। তখন সে পরিস্থিতি সামাল দেয়া কারো পক্ষে সম্ভব হবে না। উপরন্ত মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশীদের বদনাম বাড়বে।
মামুনের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। একটি মিডিয়ায় লেখা হয়েছেঃ
মালয়েশিয়া প্রবাসী কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী থানার শাসনগাছা এলাকার মৃত শাহালমের ছেলে মুন্না নামে এক শ্রমিক জানান, সে তার আত্মীয় স্বজনসহ বন্ধু মহলের ২০টি পাসপোর্টে ভিসা লাগিয়ে এবং পারমিট করে দেওয়ার কথা বলে ৭০ হাজার মালয়েশিয়ান রিংগিট নিয়ে মামুন পালিয়ে যান।
মুন্না ছাড়াও আরো ৩০ জনের কাছ থেকে ৩০ টি পাসপোর্ট সহ প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার রিংগিট নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতারক মামুনের বিরুদ্ধে।
এখন প্রতারক মামুনের প্রতারনার কারণে বিপাকে পরেছে মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত ৫০ জন শ্রমিক।
ভুক্তভোগী মামুন নামে এক শ্রমিক জানান প্রতারক মামুন আমার পাসপোর্টে ভিসা লাগিয়ে দেওয়ার কথা বলে ২ বছর যাবত আমার পাসপোর্ট আটকিয়ে রেখেছে। যার ফলে আমরা কোন জায়গায় কাজ করতে পারছিনা। পুলিশের ভয়ে রুমের বাহিরে যেতে পাচ্ছিনা। আমরা খুব মানবেতর জীবন-যাপন করছি। অনাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে। পাসপোর্ট না পেলে আমরা দেশেও যেতে পারবনা। আমাদের সবাইকে জেল খাটতে হবে।
এ প্রতিবেদক কয়েকজন ভুক্তভোগীর সাথে কথা বলেছেন এবং মালয়েশিয়া বিএনপির নেতাদের সাথেও কথা বলে বিষয়টির সত্যতা পেয়েছেন। তবে মামুনের সাথে কথা বলার জন্য তাকে পাওয়া যায়নি।