চরফ্যাশন প্রতিনিধি
চরফ্যাশন সহ ভোলার ৭ উপজেলায় বেড়েই চলছে হত্যা ও ধর্ষণের ঘটনা। গত ১১ মাসে এ পর্যন্ত জেলায় ১৭টি ধর্ষণ ও ৮৬টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার মধ্যে চাঞ্চল্যকর বেশ কয়েকট হত্যা ও ধর্ষণের ঘটনা রয়েছে। ধর্ষণ ও হত্যা মামলার ঘটনায় পুলিশ আসামীদের গ্রেফতার ও চার্জসিট দাখিল করেছে। কিছু মামলার তদন্তনাধীনও রয়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর হত্যা ও ধর্ষনের ঘটনা তুলনামূক কম বলে মনে করছে পুলিশ। গত বছর জেলায় ১৪৫টি ধর্ষন ও ৩০টি মার্ডারের ঘটনা ঘটেছিলো।
থানা গুলি সুত্রে জানা যায়, চলতি বছরে হত্যা ও ধর্ষণ মামলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘটনা ঘটেছে অক্টোবর মাসে। এ মাসে ১২টি ধর্ষণ ও ২টি হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া জানুয়ারী মাসে ১০ ধর্ষণ ও একটি খুন, ফেব্রুয়ারি মাসে ১০ ধর্ষণ ও এক খুন, মার্চ মাসে ৯টি ধর্ষণ ও একটি মার্ডার, এপ্রিল মাসে ৮ ধর্ষণ ও ২ খুন, মে মাসে খুন না হলেও ৬টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। জুলাই মাসে ৬টি ধর্ষণ ও ৪টি মার্ডার, আগস্ট মাসে ৯টি ধর্ষণ ও ২টি খুন, সেপ্টেম্বর মাসে ৭ ধর্ষণ ও ২ মার্ডার, অক্টোবর মাসে ১২ ধর্ষণ ও ২ মার্ডার এবং নভেম্বর মাসে একটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। চাঞ্চল্যকর ধর্ষনের ঘটনা ঘটেছে চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি। ওইদিন রাতে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে এক তরুণীকে গণধর্ষন করেছে প্রেমিকসহ ৫ যুবক। চরফ্যাশন থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা মনিরুজামান জানান, উপজেলার কুকরী-মুকরী সংলগ্ন নদীতে ট্রলারের মধ্যে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ ৫ ধর্ষককে আটক করেছে। এছাড়া গত ২৮ সেপ্টেম্বর চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে ভোলার চলফ্যাশন উপজেলার শশীভূশন এলাকায়। রাতে দুই সন্তানের এক জননীকে ধর্ষণের চেস্টা চালায় নাঈম নামের এক ব্যাক্তি। এ সময় ওই নারী নাঈমের পুরুষাঙ্গ কেটে দেয় গৃহবধু। এ ঘটনায় থানায় শশীভুষন থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
চাঞ্চল্যকর আরেক হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে ২০ জুন ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায়। কলেজ ছাত্র সুমনকে হত্যা করে মাটিতে পুতে রাখে হত্যাকারীরা। পরে পুলিশ ২ দিন পর মাটির নিচ থেকে লাশ উদ্ধার করে। মোবাইল ট্রেকিং করে হত্যাকারিদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় সাথে জড়িত মিঠুসহ সকল আসামীদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ২১ জুন রাতে ভোলা সদরের উত্তর দিঘলদী ইউনিয়নে প্রবীর নামের এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। চাঞ্চল্যকর এ মার্ডারের ঘটনায় পুলিশ প্রধান আসামীসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
ভোলার পুলিশ সুপার সরকার মো: কায়সার বলেন, গত বছরের তুলনায় চলতি বছর হত্যা এবং ধর্ষণের ঘটনা খুব কম। তারপরেও এ বছরের ১১ মাসে যেসব হত্যা এবং ধর্ষণ হয়েছে তার বেশীরভাগ ঘটনার তদন্ত করে পুলিশ প্রকৃত আসামীদের গ্রেপ্তার করেছে। কিছু কিছু মার্ডার ও ধর্ষণ ঘটনার চার্জসীট দাখিল করা হয়েছে।চাঞ্চল্যকর প্রবীর হত্যা মামলায় খুব শীঘ্রই চার্জসীট দিবে পুলিশ। এছাড়াও বোরহানউদ্দিনে কলেজছাত্র সুমন হত্যাকান্ডের ঘটনায় সব আসামীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সুমনের পরিবাররের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতে অপহরন নাটক করতে সুমনকে হত্যা করে। পুলিশের তদন্তে এ তথ্য বেরিয়ে আসছে। জেলা পুলিশ সুপার আরো বলেন, হত্যার মামলার মধ্যে দু’একটি নবজাতক শিশু রয়েছে। যাদের লাশ উদ্ধার করা হলেও পরিচয় পাওয়া যায়নি, ওই সব মামলায় পুলিশ আসামীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। অপরাধ দমনে পুলিশ সক্রিয় ভুমিকা পালন করছে বলে জানান ভোলার পুলিশ সুপার।