সোজা কথা ডেস্ক: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকা (ভ্যাকসিন) আবিষ্কার করার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশের ‘গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড’। গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালস গ্রুপ অব কোম্পানিজ লিমিটেডের সহযোগী এ প্রতিষ্ঠান গত ৮ মার্চ এই টিকা আবিষ্কারে কাজ শুরু করে। আগামী ৬-৭ মাসের মধ্যে টিকাটি বাজারে আনার আশা প্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ আশা ব্যক্ত করে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড।
এই টিকা আবিষ্কারে সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে ছিলেন প্রতিষ্ঠানের সিইও ড. কাকন নাগ এবং সিওও ড. নাজনীন সুলতানা।
সংবাদ সম্মেলনে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড চেয়ারম্যান মো. হারুনুর রশীদ বলেন, ৮ মার্চ কোভিড-১৯ ‘শনাক্তকরণ কিট, টিকা এবং ‘ওষুধ’ আবিষ্কার সংক্রান্ত গবেষণা কর্মকাণ্ড শুরু করা হয়। এই প্রেক্ষাপটে টিকাটির সুরক্ষা ও কার্যকারিতা নিরীক্ষার লক্ষ্যে আমরা ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এই সুরক্ষা ও কার্যকারিতা পরীক্ষায় সরকারের সহযোগিতা একান্তভাবে কামনা করছি।
তিনি আরও বলেন, এনসিবিআই ভাইরাস ডাটাবেজ অনুযায়ী, ৩০ জুন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ৫ হাজার ৭৪৩টি সম্পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্স জমা হয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশ থেকে জমা হয়েছে ৭৬টি। এসব সিকোয়েন্স বায়োইনফরম্যাটিক্স টুলের মাধ্যমে পরীক্ষা করে আমরা আমাদের টিকার টার্গেট নিশ্চিত করেছি, যা যৌক্তিকভাবে এই ভৌগোলিক অঞ্চলে অধিকতর কার্যকরী হবে বলে আশা করছি। এই টার্গেটের সম্পূর্ণ কোডিং সিকোয়েন্স যুক্তরাষ্ট্রের এনসিবিআই ভাইরাস ডাটাবেজে জমা দিয়েছি, যা ইতোমধ্যে এনসিবিআই স্বীকৃতি দিয়েছে এবং প্রকাশিত হয়েছে (accession number: MT676411)। আমাদের গবেষণাগারে আবিষ্কৃত টিকাটির বিশদ বিশ্লেষণের পর ল্যাবরেটরি অ্যানিমেল মডেলে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করে যথাযথ এন্টিবডি তৈরিতে সন্তোষজনক ফলাফল পেয়েছি।
গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালস গ্রুপ অব কোম্পানিজ লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড’ ২০১৫ সালে ক্যান্সার, আর্থ্রাইটিস, রক্তস্বল্পতা, উচ্চরক্তচাপ, অটোইমিউন ডিজিজসহ অন্যান্য দুরারোগ্য রোগ নিরাময়ের জন্য বায়োলজিক্স, নোভেল ড্রাগ এবং বায়োসিমিলার উৎপাদনের লক্ষ্যে অত্যাধুনিক গবেষণাগার স্থাপনের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে। ইতোমধ্যে এই প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা বেশ কয়েকটি দুরারোগ্য ব্যাধির বায়োসিমিলার উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে, যা বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের (বিএমআরসি) কঠিন নিয়ম-কানুনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমোদনের পথে।
এদিকে, গ্লোব বায়োটেকের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও বিধি মেনে গবেষণা ও ট্রায়াল করার তাগিদ দিচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ভ্যাকসিন ছাড়াও কিট নিয়েও কাজ করছে গ্লোব বায়োটেক।