নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা থেকে
প্রথমে ৫৪ দিন গুম ও পরে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে নিজ দেশে ‘অনুপ্রবেশ‘ এর একটিসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা ৩টি মামলায় গ্রেফতারের প্রায় আট মাস পর জামিনে মুক্তি পেলেন শফিকুল। গত ১০ মার্চ নিখোঁজ হন তিনি। আর ৩ মে বেনাপোলে তাঁর খোঁজ মেলে। সেখানেই তাঁকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের পুত্র মনোরম পলক সোজা কথা ডটকমকে জানান, বেলা সোয়া ১১ টার দিকে তাঁর বাবা কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে মুক্তি পান। শুক্রবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বাসায় ফেরেন তিনি।
শফিকুল অত্যন্ত ক্লান্ত বলেও জানান পলক। তিনি বলেন, সুস্থ বোধ করলে সবার সঙ্গে কথা বলবেন।
গত ১০ মার্চ শফিকুল ইসলাম তাঁর বকশিবাজারের বাসা থেকে দৈনিক পক্ষকাল কার্যালয়ের উদ্দেশে বের হন। তিনি হাতিরপুলের মেহের টাওয়ারের কার্যালয়ে পৌঁছান বিকেল সোয়া চারটার দিকে। পৌনে সাতটা থেকে তাঁর আর কোনো খবর পাওয়া যায়নি। তাঁর স্ত্রী জুলিয়া ফেরদৌসী পরদিন চকবাজার থানায় নিখোঁজ হওয়ার সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে আদালতের হস্তক্ষেপে চকবাজার থানায় শফিকুল ইসলামের ছেলে মনোরম পলক অপহরণের মামলা করেন।
৫৪ দিন ‘নিখোঁজ’ থাকার পর গত ৩ মে ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের খোঁজ পাওয়া যায়। এর আগের দিন শনিবার দিবাগত রাত ২টা ৪৮ মিনিটে ছেলে মনোরমের সঙ্গে বাবা শফিকুলের কথা হয়। বেনাপোল থানার একজন পুলিশ সদস্যের ফোন থেকে তিনি পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন।গুমের পর গ্রেফতার!
ও সময় বেনাপোল থানার দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা জানান, শনিবার রাতে বিজিবি এক ব্যক্তিকে তাঁদের কাছে দিয়ে যায়। পরে তাঁরা জানতে পারেন, এই ব্যক্তিই নিখোঁজ ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল।
বেনাপোল থেকে গ্রেপ্তারের পর শফিকুলের বিরুদ্ধে প্রথমে ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলা করে পুলিশ। এরপর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাদের একাধিক মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
গুমের ঠিক আগের ভিডিও ফুটেজে উদ্দেশ্যমূলক দুই ব্যক্তিকে তার মোটরসাইকেলে একটি ডিভাইস লাগাতে দেখা গেলেও পুলিশ এ নিয়ে তদন্ত করেনি। সে ভিডিও ফুটেজ নিয়ে সোজা কথা ডটকম রিপোর্ট করেছিল এবং পরবর্তীতে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গুমের শেষদিকে কথা বলিয়ে দেয়া হয়।
সম্প্রতি অ্যামিনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল কাজলকে বিবেক বন্দী হিসেবে আখ্যায়িত করে তার মুক্তির ক্যাম্পেইন জোরদার করে।