নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা থেকে
মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) মার্চ ২০২১ এর মনিটরিং প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এমএসএফ মনিটরিং প্রতিবেদনে বলেছে মার্চ, ২০২১ মাসে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড, আইন–শৃঙ্খলাবাহিনীর নির্যাতন, কারা হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা ধারাবাহিকভাবে ঘটেই চলেছে। এ মাসে নারী ও শিশুদেরপ্রতি সহিংসতা, ধর্ষণ, হত্যা ও পারিবারিক নির্যাতনের যে চিত্র পাওয়া যায় যা উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে চলেছে। সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা ও ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা ও গ্রেফতার, সীমান্তে হত্যা–নির্যাতন, সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনাও উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
মনিটরিং প্রতিবেদনের পূর্ণ বিবরণ:
বিচার বহির্ভুত হত্যা ও আইন–শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক নির্যাতন
দেশে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও এমএসএফ কর্তৃক সংগৃহিত তথ্য অনুযায়ী মার্চ, ২০২১ মাসে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন ৪ জন। কক্সবাজারের টেকনাফে র্যাব ও বিজিবি’র কথিত ক্রসফায়ার বাবন্দুকযুদ্ধে দেলোয়ার হোসেনসহ অজ্ঞাতনামা আরো দুইজন যুবকের মৃত্যু ঘটে। চাঁদপুরে নৌপুলিশের অভিযানে মেঘনা নদীতে জেলেদের সাথে সংঘর্ষে মাসুদ মিয়া নামের এক জেলে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। এ ঘটনার গুলোর তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে কিনা আমরা অবহিত নই।
এছাড়া ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে হেফাজতে ইসলামের লাগাতার বিক্ষোভ সমাবেশ ও তাদের ডাকা ২৮ তারিখের হরতালকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্নস্থানে পুলিশের সাথে দফায় দফায় সংঘর্ষে হেফাজতের দাবি ও খবরের কাগজের রিপোর্ট মোতাবেক কমপক্ষে ১৪ জন কর্মী নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছে। যা শুধুমাত্র অপ্রত্যাশিতই ছিল না বরং অনাকাঙ্খিতও ছিল। চট্রগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, ফরিদপুর, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকাতে সংঘর্ষের ঘটনাগুলোতে বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণ করতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলপ্রয়োগকে পদক্ষেপ হিসেবে বেঁছে নেয়াতে জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের এ ধরণের সহিংস কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রনে পূর্ব থেকেই পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করলে উদ্ভূত পরিস্থিতি বহুগুনে এড়ানো যেতো বলে আমরা মনে করি। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদেরও পুলিশের সাথে হামলা করতে দেখা যায়। যা অনভিপ্রেত ও অত্যন্ত নিন্দনীয়।
মার্চ, ২০২১, কারা হেফাজতে ৩ জনের মৃত্যু ঘটেছে। কিশোরগঞ্জ কারাগারে সাহিন মিয়া, কাশিমপুর কারাগারে ইব্রাহীম হোসেন এবং চাপাইনবাবগন্জে মোরশেদ আলী কারাবন্দী হিসেবে মারা যায়। অসুস্থ কারাবন্দীদেরকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন। আমাদের জানা মতে, এ ঘটনার গুলোর তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। ।
শিশু ও নারীর প্রতি সহিংসতা
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও এমএসএফ কর্তৃক সংগৃহিত তথ্য অনুযায়ী এ সময়ে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতাযেমন; ধর্ষণ, পারিবারিক সহিংসতা ও হত্যার ঘটনা অব্যহতভাবে ঘটে চলেছে যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এমএসএফ কর্তৃক সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী এ মাসে ৩৪২টিনারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে, যার মধ্যেধর্ষণের ঘটনা ১১২টি, (গণধর্ষণ ১৮টি, ধর্ষণ ও হত্যা ২টি উল্লেখযোগ্য), এদের মধ্যে ৮ জন প্রতিবন্ধী শিশু কিশোরীওধষর্ণের শিকার হয়েছে। তাছাড়াও ১১জন শিশুসহ মোট ২৬জন কিশোরী ও নারী ধর্ষণের চেষ্টা ও শারীরিকনির্যাতনের শিকার হয়েছে । অ্যাসিড নিক্ষেপে আক্রান্তহয়েছে ৩জন কিশোরী। এ মাসে ৪জন শিশুসহ ৫৪জন নারীও কিশোরী আত্মহত্যা করেছেন। অপহরণের শিকার হয়েছে১জন শিশু, ২জন কিশোরী ও ২ জন নারীসহ মোট ৫জন।অপরদিকে ৮জন শিশু কিশোরী নিখোঁজ রয়েছে। এছাড়াওমার্চ মাসে ৮৯ জন নারী ও শিশু হত্যাকান্ডের শিকারহয়েছেন যার মধ্যে ১০ জনের মৃত্যু ছিল অস্বাভাবিক।গণমাধ্যম সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী পারিবারিক বিরোধ, প্রতিশোধ, যৌতুক, তালাক, ইত্যাদি কারণে এহত্যাকান্ডগুলো সংঘটিত হয়েছে। এ মাসে সাতজন নবজাত শিশুকে বিভিন্ন স্থানে পরিত্যাক্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। এর মাঝে চারটি শিশুকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় যা অমানবিক ও নিন্দনীয়।এ শিশুদেরকে কি কারণে পরিত্যাক্ত অবস্থা পাওয়া গেছে, সংস্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তা নিরিুপনের চেষ্টা না করে, এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় না এনে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে দত্তক দেয়ার মধ্যেই এর সমাধার করার চেষ্টা করেছে।
দুইটি পরিবারের ওপর নিষেধাজ্ঞা
ফেনীর ফুলগাজীতে এক পুলিশ সদস্য কর্তৃক ধর্ষণের শিকার এক কিশোরী সম্প্রতি সন্তান জন্ম দিলে স্থানীয় সমাজপতিরা অবিবাহিতা কিশোরীর বাচ্চা হওয়ায়, তাকে নষ্টা মেয়ে আক্ষ্যা দিয়ে তাঁর পরিবারকে সমাজচ্যুত করে। সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করা হলেও ভূক্তভোগী পরিবাটিকে পূর্নবাসিত করার বিষয়ে পুলিশ এখনো কোন পদক্ষেপ নিয়েছে কিনা জানা যায়নি।
নোয়াখালীর সুবর্নচরে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে মামলা করলে ভূক্তভোগী পরিবারটিকে এলাকার সমাজপতিরা প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে একঘরে করে রেখেছে। পরিবারটিকে মসজিদে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। ছোট বাচ্চাদেরকে মক্তব ও মাদ্রাসায় যেতে দেওয়া হচ্ছে না। শিশু ও নারীদের প্রতি ক্রমবর্ধমান সহিংসতার ধারাবাহিকতা আমাদের জাতীয় জীবনে অন্যতম প্রধান উদ্বেগ হিসেবে দেখা দিয়েছে।
সীমান্তে হত্যা–নির্যাতন
মার্চ ২০২১ মাসে দেশের সীমান্ত এলাকাগুলোতে ভারতীয়সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ–এর গুলি ও জোরপূর্বক গ্রেফতারের ঘটনা ঘটেছে। ২জন নিহত ও ২জন বাংলাদেশীনাগরিককে জোরপূর্বক আটক করে নিয়ে গেছে বিএসএফ সদস্যরা। মৌলভীবারের জুড়ি সীমান্তে এক কাঠ ব্যবসায়ীকে বিএসএফ গুলি করে হত্যা করে। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তে বিএসএফএর ছোঁড়া গুলিতে সাইদুর রহমান নামের এক যুবককে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। কুড়িগ্রামের রৌমারীতে বিএসএফ আব্দুল হাই ও জামালপুর বক্সীগঞ্জ সীমান্ত থেকে মিরানা আক্তার নামের এক কিশোরীকে আটক করে নিয়ে যায়। উচ্চ পর্যায় থেকে বারংবার প্রতিশ্রুতি সত্বেও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর তরফ থেকে বাংলাদেশী নাগরিক হত্যা বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। বাস্তবতা হলো, একটি হত্যাকান্ডের পর পতাকা বৈঠক ও নিহতের মরদেহ গ্রহণ ছাড়া বিজিবির কোনো তৎপরতা কারও চেখে পড়ে না।
মতপ্রকাশের অধিকারের লংঘন ও সাংবাদিকতা
বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ব্যাপক ব্যবহার এ মাসে নানা উদ্বেগ আর ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। মার্চ, ২০২১মাসে ৯টি মামলা করা হয়েছে এবং ৯ জন নাগরিককেডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে। জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কটুক্তি করায় কুষ্টিয়া কলেজের শিক্ষক এ,এফ.এম রাজিব আলম ও খুলনাতে ব্যাংক কর্মকর্তা উত্তম সরকারকে মামলায় গ্রেফতার কর হয়। ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত হানার অভিযোগে সামাজিক গণমাধ্যমে প্রকাশ করায় চট্টগ্রাম করিগরি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র, লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের মিথুনজয় মজুমদার ও সুনামগেঞ্জের সাল্লাতে ঝুমন দাসকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেফতার করা হয়। সুনামগঞ্জের শাল্লার নোয়াগাঁও গ্রামে ঝুমন দাস (২৮) নামের এক যুবক ফেসবুকে হেফাজত নেতামামুনুল হককে নিয়ে পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে ঐ রাতেইহিন্দু সম্প্রদায়ের এলাকাবাসীরা ঝুমন দাসকে আটক করেপুলিশে দেন। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়
তাঁর বিরুদ্ধে থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাহয়েছে। বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন ছাত্রলীগ নেতা জাহেদুল ইসলাম। সামাজিক গনমাধ্যমে আইন শৃংঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করায় দিনাজপুরের ফুলবাড়ি থেকে কালিদাস দত্তকে গ্রেফতার করা হয়। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীরের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভুল তথ্য ছাড়ানোর অভিযোগে ছাত্রলীগের দুই নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিশোরগঞ্জ বাজিতপুরে এক বৃদ্ধ কৃষককে ফেসবুকে একাউন্ট না থাকলেও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেফতার করা হয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নির্বিচারে প্রয়োগ মুক্তচিন্তক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসীদেরমধ্যে ভয় ও উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে এআইনটি বাতিলের দাবি জোরদার হয়ে উঠেছে। সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে যেভাবে বাধা দেয়াহচ্ছে এবং তাদের যেভাবে হয়রানি ও শারীরিকভাবেআক্রমণ করা হচ্ছে তা অগ্রহণযোগ্য এবং গণমাধ্যমেরস্বাধীনতার জন্য অশনিসংকেত।
সংখ্যালঘু নির্যাতন
গনমাধ্যমসূত্রে পাওয়া এমএসএফ এর পরিসংখ্যান অনুযায়ীএ মাসে ৭টি সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। দেশের বিভিন্নস্থানে সংখ্যালঘুদের ওপর দুর্বৃত্তদের হামলা, লুটপাট ও প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রাস্তায় বালু ফেলার জের ধরে হিন্দু পরিবারের লোকজনের ওপর হামলার ফলে অন্তত ৪জন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। নেত্রকোনার দূর্গাপুর পৌর এলাকার প্রাচীনতম শ্রী শ্রী শ্মশান কালিবাড়ি মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর করেছে দূর্বৃত্তরা। এ পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে রূপসদী খানেপাড়ায় যুবলীগসভাপতির পক্ষে মিছিলে না যাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে রূপসদীরাধা গোবিন্দ মন্দিরে আসা–যাওয়ার দুটি পথ বাঁশের বেড়াদিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মো. জাকির হোসেন। এ ঘটনায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যেআতঙ্ক বিরাজ করছে। রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলায়সংখ্যালঘু অধ্যুষিত খাগজানা গ্রামে হামলা চালিয়েছেদুর্বৃত্তরা। তাদের হামলায় রাম সাহা, সুদেব কর্মকার ও সেন্টুকর্মকার নামে তিনজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনার পর সংখ্যালঘু সম্প্রদায় আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। এ সমস্ত ঘটনার কিছু কিছু মামলা হলেও দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয় নাই।
এখানে উল্লেখ্য যে, ১৫ মার্চ, ২০২১ তারিখ সোমবার মাওলানা মামুনুল হকসহ হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয়নেতারা সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলা শহরে একটি সমাবেশে বক্তব্য দেন। নোয়াগাঁও এর হিন্দু সম্প্রদায়ের ঝুমন দাসফেসবুকে হেফাজত নেতাকে নিয়ে পোস্ট দিলে এলাকায়উত্তেজনা দেখা দেয়। মঙ্গলবার রাতেই হিন্দু সম্প্রদায়ের এলাকাবাসীরা ঝুমন দাসকে আটক করে পুলিশে দেন। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয় তাঁর বিরুদ্ধে থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। অথচ পরদিন সকালে আশপাশের চারটি গ্রামের কয়েক হাজারমানুষ জড়ো হয়ে নোয়াগাঁও গ্রামের কাছাকাছি যান। সেখানথেকে শতাধিক ব্যক্তি লাঠিসোঁটা নিয়ে হিন্দুদের গ্রামে হামলাচালিয়ে তাঁদের অন্তত ৯০টি ঘরবাড়ি ভাঙচুর, ঘরের ভেতরে থাকা প্রতিমা ভাঙচুর ও লুটপাট করে ঘরের টাকাপয়সা নিয়ে যায়। আইন শৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পূর্ব থেকে সতর্ক থাকলে এ ধরণে অনাকাংখিত ঘটনা এড়ানো সম্ভব ছিল। সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতির পরিবেশকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে ধর্মান্ধ ও মৌলবাদী শক্তির ইন্ধনে এ ধরণের হামলার ঘটনা ঘটেছে, যা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী।
মার্চ ২০২১ মাসের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনার প্রেক্ষিতে আমাদের বক্তব্য হলো দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ছিল উদ্বেগজনক ও ভয়াবহ। দেশের মানবাধিকার রক্ষায় একটি গ্রহণযোগ্য মান বজায় রাখা ও প্রসারে সরকারের দায়িত্ব ও কর্তব্য। মানবাধিকার লংঘন প্রতিরোধে আইনের শাসন, নিরপেক্ষতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা অত্যাবশ্যকীয়। করোনা ভাইরাসের এই সংকটকালীন সময়েমানবাধিকারের সুরক্ষা বিশেষ করে মানুষের জীবনের অধিকার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সরকারের আরও আন্তরিক ও দৃশ্যমান ভূমিকা গ্রহণ করা আবশ্যক বলে এমএসএফ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে।
তথ্যসূত্র: প্রথম আলো, ডেইলি ষ্টার, কালের কন্ঠ, আমাদেরসময়,বাংলাদেশ প্রতিদিন, দেনিক মানবজমিন, সমকাল, ইত্তেফাক, ঢাকা ট্রিবিউন ও অন্যান্য জাতীয়দৈনিকসমূহ প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে উপরোক্তপ্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। তাছাড়াও প্রায় প্রতিটি ঘটনারক্ষেত্রেই স্থানীয় হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারদের মাধ্যমে তাভেরিফাই করা হয়েছে। এখানে উল্লেখ্য যে ১ জানুয়ারী ২০২১ থেকে ৩১ জানুয়ারী ২০২১ পর্যন্ত সংঘটিতঘটনার ভিত্তিতে এ রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।