আমি জানি, আমার যাত্রা অনিশ্চিত। তবু্ও পথ চলছি।এ পোস্টে বাংলাদেশের তিনজন সাংবাদিকের ছবি দেয়া হলো।একজন প্রভাবশালী,রাতের টেলিভিশনে টক শোতে সুন্দর করে কথা বলতেন।তাঁকে বলাযায় আধুনিক সাংবাদিকতার মডেল।আরেক জন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নে পরিচিত সাংবাদিক। অপরজন পঁচা সাংবাদিক। তবে একে অপরের সাথে সু সম্পর্ক ছিলো, বিগত দিনে।বন্ধুরা আমার অপরাধ মার্জনা করবেন। একজনকে পঁচা সাংবাদিক বলে সম্মোধন করালাম, এ জন্য। যাকে পঁচা বললাম তিনি কক্সবাজার প্রতিনিধি ছিলেন,একটি পত্রিকার পোস্টের ছবিতে ঐ পত্রিকার সম্পাদক মালিক রয়েছেন। ব্যক্তিগত সখ্যতাও ছিলো তাদের মাঝে। অপর অনালোচিত সাংবাদিকের সাথেও তার সখ্যতা ছিল। কেননা তারা সবাই একই হাউজের সাংবাদিক।
আমি আমার সৃজনশীল কাজ করতে প্রায়ই কক্সবাজার যেতাম। দিনের পর দিন, সৈকতে কাটাতাম।আমার লেখালেখির জন্য।সৈকতে অামার পছন্দের অন্যতম স্থান ছিলো, কক্সবাজার এয়ারপোর্ট সংলগ্ন পুরোনো বিচ। কেননা, ওখানে পর্যটকের কোলাহল নেই বললেই চলে। মাঝে মধ্যে দরিয়া নগর বানরের পাহাড়ের পাদদেশে স্থানীয় সাংবাদিক আহমেদ গিয়াস এর টং ঘরেও কাটাতাম।আহমেদ গিয়াসকে নিয়ে সৈকতের সাগর লতা (সী কোস্টাল) এর উপরে বসে আড্ডা দিতাম।
বাংলাদেশের বেশিরভাগ স্থানীয় সাংবাদিক বিনাবেতনে বা কেউ কেউ নামে মাত্র ভাতায় কাজ করে আসছেন। তবে পত্রিকা মালিক বা টিভি চ্যানেল কর্তৃপক্ষ স্থানীয় সাংবাদিকদের একটি পরিচয়পত্র ও নিয়োগপত্র ধরিয়ে দেন।এটা শুধু কক্সবাজারেই নয়। সারা বাংলা দেশের সাংবাদিকদের। স্হানীয় সাংবাদিকরা, ও সব পত্রিকায় বিজ্ঞাপন সংগ্রহ করে কমিশন গ্রহন করেন।
আমি বলতে বাধ্য, কক্সবাজারের সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা খান ভালো লিখতেন।তবে আমি তাঁর ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে আলোচনায় যাচ্ছি না।তিনি তাঁর পরিবার পরিজন নিয়ে কক্সবাজার শহরে, অনেকটা অমানবিক জীবন যাপন করতেন।মাত্র দু’ শো টাকা সংগ্রহের জন্য,সারাটি দিন কক্সবাজার শহরে ছুটে চলতেন।একটি সময় তাঁর সাথে খটকা বাধে টেকনাফের ওসি প্রদীপ বাবুর সাথে।ফরিদুল মোস্তফা খান ফেসবুকে প্রদীপ বাবুর নানান অপকর্মের কাহিনি তুলে ধরতে থাকেন।এতে ওসি প্রদীপ ক্ষিপ্ত হন,ফরিদুল মোস্তাফার ওপর।ফরিদুল মোস্তফা অপরাধী বা অপরাধী নন,আমি সে কথা বলতে চাই না।
একজন মানুষ অপরাধ করলে,তাঁর নামে মামলা হতেই পারে।দেশের প্রচলিত আইনে তাঁর বিচার হবে।তবে একটি কথা বলতে আজ বাধ্য হচ্ছি।ফরিদুল মোস্তফা বিদেশি, দামি ব্রান্ডের মদ গেলার লোক নন।তাঁর সে পয়সা ছিলো না।আর অস্ত্র! অস্ত্র রাখার যোগ্যতাও, তার ছিলো না।হতে পারেন, পঁচা সাংবাদিক। তবে অস্ত্রধারী মানুষ তিনি নন।ফরিদুল মোস্তফার নামে একাধিক মামলা হলো! বিদেশি ব্রান্ডের মদ, অস্ত্র সহ নানান সাজানো উপকরণ দিয়ে। টেকনাফের ওসি প্রদীপ, ফরিদুল মোস্তফাকে ঢাকা থেকে কয়েকটি মামালয় গ্রেফতার করে, তার টেকনাফের টর্চার সেলে নিয়ে,হাত পা ভঙ্গে অমানুষিক নির্যাতন চালায়।প্রায় মৃত্যু ভেবে ফরিদুল মোস্তফাকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে পুলিশের পাহারায় চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করে।
বিষয়টি আমি জেনে, এক গভীর রাতে, মুঠোফোনে এ পোস্টে দেয়া ছবির একজন সাংবাদিককে ফোন করে, বিনয়ের সাথে বলি,আপনি ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নে নির্বাচন করতে যাচ্ছেন,ফরিদুল মোস্তফাকে আপনি চেনেন।একই হাউজে ছিলেন,তিনি আপনাদের কক্সবাজার প্রতিনিধি ছিলেন। বিষয়টি বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দকে মানবিক কারণে জানান।সে অপরাধী হলেও একজন মানুষ তো!
ঘটনা প্রায় বছর গড়িয়ে গেছে।
ফরিদুল মোস্তফা এখন কক্সবাজার কারাগারে মৃতপ্রায়।জেল থেকে মুক্তি পেলেও, জীবনে বেঁচে থাকবেন পঙ্গু হয়ে।প্রভাবশালী পুলিশ কর্মকর্তা প্রদীপ বাবু তার জীবন প্রদীপ নিভিয়ে দিয়েছেন।সাংবাদিক নয় একজন মানুষ হিসেবেও এই নিষ্ঠুর অত্যাচারের প্রতিবাদ করে, কেউ রূখে দাঁড়ান নি।তাই আমি বাংলাদেশের সকল বিনে বেতন,নিনে ভাতায় কাজ করা সাংবাদিক ভাইদের প্রতি অনুরোধ করছি। অন্তত
নিষ্ঠুরতার হাত থেকে নিজেকে রক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন।পত্রিকা বা চ্যানেল কর্তৃপক্ষ আপনার দ্বায় নেবেন না।কেহ প্রতিবাদও করবেন না।
– নাসিম আনোয়ার, সাংবাদিক, লেখক
ঢাকা ৩ আগস্ট ২০২০
(বানানরীতি ও মতামত লেখকের নিজস্ব, সোজা কথা ডটকমের এ ক্ষেত্রে দায় নেই)