চরফ্যাশন প্রতিনিধি: মা ইলিশ রক্ষা অভিযান শুরু হবার আগমুহুর্তে ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে জেলেদের রূপালী জালে সোনালী ইলিশের দেখা মিলেছে। ইলিশে সয়লাব চরফ্যাশন উপজেলার ছোট বড় ৫০টি মাছ ঘাট। আর তাই নাওয়া-খাওয়া ভুলে দিন রাত ইলিশা ধরা আর মোকামে চালান করা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলে ও মাছ ব্যবসায়ীরা। এদিকে মেঘনা তেঁতুলিয়া নদীতে কাঙ্খিত ইলিশের দেখা মেলায জেলেদের মধ্যে যখন খুশির আমেজ বিরাজ করছে। কিন্তু মহাজনের ধার দেনা পরিশোধের আগেই নিষেধাজ্ঞার কারণে হতাশ মৎসজীবীরা।
সরেজমিনে উপজেলার ২০টিরও বেশি মাছঘাট ঘুরে জানা গেছে, আগামী ১৪ অক্টোবর থেকে নিষেধাজ্ঞার কারণে মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে সব ধরনে মাছ ধরা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই নষ্ট করার মতো সময় নেই ইলিশ শিকারীদের হাতে। জাল টেনে যা পাচ্ছে তা আড়তে রেখে আবার ছুটছে নদীতে।নিষেধাজ্ঞার আগ মুহুর্তে ইলিশের দেখা মিলেছে চরফ্যাশন উপজেলার জেলেদের জালে। সারাবছরের অপেক্ষার যেন কিছুটা অবসান ঘটিয়ে ঘাটগুলোতে ফিরে এসেছে কর্ম ব্যস্ততা। গত কযকে মাস ধরে যে ঘাটগুলোতে সুনসান নীরবতা ছিল এখন সেখানে জেলে ও পাইকারদের হাঁকডাকে মুখরিত হয়ে উঠেছে।
ইলিশের দাম বেশী হওয়ায় জেলেরা যেমন লাভবান হচ্ছে তেমনি মৎস্য আড়ৎদারগনও তাদের লোকসান পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু আগামী ১৪ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়ায় মা ইলিশ রক্ষা অভিযানকে ঘিরে নতুন করে শংকা দেখা দিয়েছে জেলেদের মাঝে। কথা হয চরফ্যাশন উপজেলার চরমাদ্রাজ ইউনিযনের জেলে ইসমাইল মাঝি, খলিল মাঝিসহ ১০-১২ জনের সাথে। তারা জানান, প্রতি বছরেই আকাল কাটিয়ে নদীতে যখন ইলিশ আসতে শুরু করে তখনই নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়। এতে করে তারা ক্ষতির মধ্যেই থেকে যাচ্ছে। তাই অভিযান আরো ১৫ দিন পিছিয়ে দেয়ার দাবি জানান তারা। সেই সাথে সকল জেলেদেরকে সরকারি সহায়তার চাল দেয়ার দাবিও করেন তারা।
অপরদিকে ঢালচর মাছঘাটের আড়তদার মোঃ ইসরাফিল, হারুন ও ইউনুছ মিযা জানান, দীর্ঘ দিন নদীতে মাছ না থাকার কারনে ব্যবসায়ীরা জেলেদেরকে লাখ লাখ টাকা দাদন দিয়ে বেকার বসে ছিলো। গত কয়েক দিন ধরে নদীতে মাছের দেখা মেলায় কিছুটা ক্ষতি পুসিয়ে নেয়ার আশা ছিলো। কিন্তু ১৪ অক্টোবর থেকে মা ইলিশ রক্ষা অভিযান শুরু হলে এবছর লোকসানের মুখে পরতে হবে বলে জানান তারা।
চরফ্যাশন মৎস্য কর্মকর্তা মিনার হোসেন মারুফ জানান, বর্তমানে জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ মাছ ধরা পড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে ইলিশের উৎপাদনের যে লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা অর্জন করা সম্ভব হবে। এবছর ভোলা জেলায় ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৬৫ হাজার মেট্টিক টন। মৌসুমের প্রথম ৩ মাসেই ধরা পড়েছে প্রায় ৫৫ হাজার মেট্টিক টন ইলিশ।