শিপু ফরাজী
চরফ্যাশনের তেতুলিয়া নদীর ভাঙ্গনকবলিত এলাকার বাধঁ প্রতিরক্ষা,ড্রেজিং ও বন্যা নিয়ন্ত্রনে স্থাপিত সিসি ব্লক এবং জিওব্যাগ ডাম্পিং এরিয়ার ওপর আধাঁপাকা স্থায়ী ঘর নির্মাণ করে বাজার মেলানোর ফলে দুইশত কোটি টাকার প্রকল্প ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। চর কলমী ইউনিয়নের প্রভাবশালী ৮ ব্যক্তি মিলে প্রকল্পের ১১ নং প্যাকেজের আওতাধীন বসকী লঞ্চঘাট এলাকায় বাধঁ প্রতিরক্ষা,ড্রেজিং ওপর এই বাজার মিলিয়েছেন। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন-২ এই ঘটনায় ৮ জনকে আসামী করে শশীভূষণ থানায় অভিযোগ দাখিল করেছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। শনিবার শশীভূষণ থানার ওসি রফিকুল ইসলাম এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
চরফ্যাশন উপজেলাধীন তেতুঁলিয়া নদীর ভাঙ্গন হতে বকসী লঞ্চঘাট হতে বাবুরহাট লঞ্চঘাট পর্যন্ত প্রতিরক্ষা ও ড্রেজিং বন্যা নিয়ন্ত্রন প্রকল্পের কাজ চলমান আছে। প্রকল্প এলাকায় স্থাপিত সিসি ব্লক ও জিওব্যাগ ডাম্পিং এরিয়ার বকসী লঞ্চঘাট সংলগ্ন বাধেঁর উপর স্থানীয় ৮ প্রভাবশালী ব্যক্তি বাজার মিলিয়েছেন। বাজারের জন্য এখন পর্যন্ত ২৮টি আধাপাকা টিনশেড ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। ঘরগুলো এখন স্থানীয় মাছব্যবসায়ীদের কাছে ১ থেকে দেড় লাখ টাকা দামে পজেশন আকারে বিক্রি করা হচ্ছে। নির্মানাধীন প্রতিরক্ষা বাধেঁর উপর এসব স্থাপনা নির্মানের জন্য প্রকল্প এলাকা থেকে স্টক পাইলস হিসেবে সংরক্ষিত সিসি ব্লক নিয়ে নির্মানাধীন বাজারের চারপাশ ঘেরাও করা হয়েছে। যা নদীর পাড় সংরক্ষণ ও বন্যা প্রতিরক্ষা বাধেঁর ডিজাইন বর্হির্ভূত এবং প্রকল্পের জন্য হুমকীস্বরূপ।
চরফ্যাসন পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিভিশন-২ এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. শাহ আলম ভ‚ইয়া বাদি হয়ে এই ঘটনায় শশীভূষণ থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। এজাহার সূত্রে জানা যায়, বকসী লঞ্চঘাট এলাকার ইসমাইল মেম্বার, তুহিন হাওলাদার, মিজানুর রহমান, আলমগীর মৃধা, আবুল বাশার, আকবর হোসেন, মো.হাবিব এবং মো. ফরহাদ প্রকল্প এলাকায় বাধেঁর উপর এসব স্থাপন নির্মাণ করেছেন। এজাহারে জনস্বার্থে নদীভাঙ্গন থেকে রক্ষার্থে মার্কেট নির্মাণ কাজ বন্ধসহ নির্মিত অবকাঠামো সমূহ অপসারণ এবং মার্কেটের চর্তুদিকে স্থাপিত ব্লক যথাস্থানে স্টক দেয়ার ব্যবস্থা করতে অনুরোধ করা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিভিশন-২ এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের চলমান প্রকল্প এলাকার নদীর পাড় সংরক্ষণ ও বন্যা প্রতিরক্ষা বাধেঁর উপর বাজার মেলানো হয়েছে। যা প্রকল্পের জন্য হুমকীস্বরূপ। সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই ঘটনায় ৮ জনকে সনাক্ত করে থানায় অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। পাশাপাশি স্থাপনা নির্মাণে জড়িতদের নিজ দায়িত্বে এসব সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। তা করা না হলে খুব শীঘ্রই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে। অবৈধদখলকারী মিজান মুন্সি জানান, ওই জায়গা আমাদের রেকর্ডিয়, পানি উন্নয়ন বোর্ড অধিগ্রহণ না করেই আমাদের জমির উপর দিয়ে নদীর পাড় সংরক্ষণ ও বন্যা প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মান করেছে। তাই আমাদের জায়গায় আমরা ঘর নির্মান করে মার্কেট নির্মান করছি।
শশীভূষণ থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অবৈধ এসব স্থাপনা সরাতে শীঘ্রই অভিযান পরিচালনা করা হবে।